বিজ্ঞাপন

নিরাপদ প্রাথমিক শিক্ষায় আমাদের করণীয় | মাহমুদুল হক আনসারী

 



শতভাগ শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা করা সমাজের অন্যতম দায়িত্ব। সমাজকে এ বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুরা আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ, আগামীর ভবিষৎ। তাদের উজ্জ্বল ভবিষৎ গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের নিচে সকল বালক সন্তানকে শিশু হিসেবে বিবেচনা করেছে। শিশুর জন্য চাই সুন্দর আগামী। এর জন্য প্রয়োজন নিরাপদ সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ। এসব বাস্তবায়নে শিশু অধিকার সনদ ও শিশুর সুরক্ষা গুরুত্ব দেয়া উচিত। একটি শিশুকে মানব প্রগতির অনিবার্য অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে যেসব সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার তার সবকিছুই শিশু অধিকার সনদে বিদ্যমান। শিশুদের অংশগ্রহণের অধিকার এবং শিশুর সুরক্ষার অধিকার সবকিছু সমাজকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুর সামাজিক, পারিবারিক বিদ্যালয়ের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে তার কথা বলতে নির্ভয়ে সুযোগ করে দিতে হবে। ঘরে বাইরে এ সুযোগ থাকা চায়। তাই শিশুর মনন বিকাশে অংশগ্রহণের অধিকার প্রাথমিক স্তর হচ্ছে পরিবার ও বিদ্যালয়। পরিবার ও শিক্ষাকেন্দ্রে নির্ভয়ে তাদের মতামত প্রদান করার অধিকার শিশুদের থাকতে হবে। শিশুদেরকে শিশু সংগঠন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। একইভাবে সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আওতায় শিশুকে স্বাধীন মতামত বা চিন্তা প্রকাশ করতে দিতে হবে। বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে সংঘবদ্ধ হওয়া ও নিজস্ব ভাষা ধর্মচচার্র স্বাধীনতা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ধমর্ীয় আচার অনুষ্টান ও নৈতিক চরিত্র চচার্র সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শিশুদের অবাধ তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তাও দিতে হবে। বিদ্যালয়কে ভয়ভীতির উর্ধ্বে তুলে নিরাপদ আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে শিশুর অংশগ্রহণ ও অধিকার পাওয়াকে নিশ্চিত করতে হবে। জাতির উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও গতিশীল সমাজ সৃষ্টিতে দক্ষ মানবসম্পদেও বিকল্প নেই। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। তাই প্রাথমিক শিক্ষার ভিত শুরু থেকে মজবুত ও টেকসই করতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর জন্য প্রারম্ভিক শিক্ষা। তাই এ শিক্ষাকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দিয়ে শিশুদের জন্য যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম তৈরী করতে হবে। বর্তমানে এ শিক্ষাকে মান উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচী রয়েছে। কিন্তু মাঠ পযার্য়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার  তৈরীর মাধ্যমে এর সুফল বাস্তবায়ন ধীর গতিতে। সরকারের কর্মসূচীর বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা সম্মিলিত ভাবে সমাজকে গ্রহণ করা উচিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়া প্রায় শতভাগ শিশু বিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। বছরের প্রথম দিনে নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে  তুলে দেয়া হচ্ছে। আর্থ-সামাজিকভাবে আমাদের দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী অধিকাংশ শিশু নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসে। তাই স্বভাবতই  তাদের অপুষ্টির শিকার হয়ে জন্মগ্রহণ হয়। জন্মের পরেও তারা অপুষ্টিতে ভোগে। তাই তাদের বিভিন্ন প্রকারের শারিরীক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। পুষ্টিহীনতার কারণে তাদের মেধা শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। পারিবারিক অভাব অনটনের ফলে অনেক শিক্ষার্থী মাঝপথে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে। ফলে  তাদের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ঝরে না পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি প্রচলন করেছে। এ বৃত্তির ফলে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা যাওয়া ও শিক্ষা গ্রহণ করছে। এটার সুফল প্রাথমিক শিক্ষায় মিলছে। প্রাথমিক শিক্ষায় আরো অধিক ভাবে নৈতিক শিক্ষা ঢেলে সাজানো উচিত। কারণ প্রাথমিক স্তর থেকে একজন শিক্ষার্থী তার নৈতিক চরিত্র শিক্ষা গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হলে সেটা জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। আজকের নানামুখী শিক্ষা কার্যক্রম দেশে চালু থাকলেও নৈতিক শিক্ষা অত্যন্ত নগণ্য এবং বিপর্যয় অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার সাথে নৈতিক শিক্ষা শিক্ষকদের প্রদান করা নিয়ম মাফিক রুটিন ভিত্তিক রাখা দরকার। জাতির অগ্রগতি পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে আদর্শিক শিক্ষিত জাতি গঠন করতে নৈতিক শিক্ষাকে প্রাধান্য রাখা চায়। নৈতিকতা ব্যতিরেকে শুধুমাত্র গতানুগতিক শিক্ষা অর্জন বিস্তার সামাজিক অগ্রগতি বয়ে আনতে পারে না। তাই সব ধরনের পাঠ্য বইয়ের শিক্ষার সাথে ধমর্ীয় মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষা কাগজে কলমে বাস্তবে অনুশীলন সামাজিক দায়িত্ব। শিশুর নিরাপদ প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের সাথে নৈতিক শিক্ষার বাস্তবায়ন রক্ষা হোক।   


লেখক

মাহমুুদুল হক আনসারী

সংগঠক,গবেষক,কলামিস্ট

মোবাইল:০১৮১৪৮৭৩৩৫৪



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

Advertisement